বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১:৫৫ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনামঃ
জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন গাছা থানা কমিটির অনুমোদন উড়িষ্যা থেকে কলকাতা ফেরার পথে ,ব্রীজ থেকে উল্টে পড়লো যাত্রীবাহী বাস যুক্তরাজ্য শেফিল্ড আওয়ামী লীগের ইফতার ও দোয়া মাহফিল উত্তরা সেন্ট্রাল প্রেসক্লাবের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত  “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কে আন্তরিক ধন্যবাদ” নাটোর বড়াইগ্রামে ভুয়া এএসআই আটক ঢাকার এক বাড়িওয়ালা অনন্য নজির স্থাপন করলেন স্বাধীনতা আমাদের জাতীয় জীবনের শ্রেষ্ঠ অর্জন: খসরু চৌধুরী এমপি-১৮ হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তির সহস্রাধীক পরিবারের মাঝে ইঞ্জিঃ মোহাম্মদ হোসাইনের ঈদ উপহার বিতরণ  ২৬ শে মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস ২০২৪ উপলক্ষে পুষ্পস্থবক বিনম্র শ্রদ্ধা

নেত্রকোনার দূর্গাপুরে স্বামীর পরকীয়ায় তছনছ তানজিলা নাসরিন মীমের সংসার

নেত্রকোনার দূর্গাপুরে স্বামীর পরকীয়ায় তছনছ তানজিলা নাসরিন মীমের সংসার

 

সোহেল খান দূর্জয় নেত্রকোনা প্রতিনিধি : দৈনিক ঢাকার কন্ঠ নিউজ

নেত্রকোনার দূর্গাপুরে স্বামীর পরকীয়ায় বাধা দেয়ায় স্ত্রীকে নির্যাতন করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্বামীর পরকীয়ায় বাধা দিতে গিয়ে স্বামীর মারপিটে গুরুতর আহত স্ত্রী তানজিলা নাসরিন মীম বিভিন্ন সময় বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা ও নিয়েছেন।

গৃহবধূ তানজিলা নাসরিন মীম(২২) মারপিট করে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েই ক্ষান্ত হননি স্বামী গোলাম মোস্তফা হীরা। তানজিলা নাসরিন মীমকে এখন বিভিন্নভাবে হুমকিও দিচ্ছেন তিনি।ঘটনাটি ঘটেছে নেত্রকোনার দূর্গাপুর পৌরসভার মাখরাইল এলাকায়।

জানা যায়, নেত্রকোনার দূর্গাপুর উপজেলার শ্রীরামখিলা গ্রামের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে গোলাম মোস্তফা হীরা (২৭) সঙ্গে ২০১৯ সালে দূর্গাপুর পৌরসভার মাখরাইলের বাসিন্দা এম.এ.মান্নান তোতা মিয়ার মেয়ে তানজিলা নাসরিন মীমের (২২) বিয়ে হয়। বর্তমানে তাদের সংসারে দেড় বছরের একটি মেয়ে রয়েছে।

বিয়ের পর থেকে বিভিন্ন সময়ে তানজিলা নাসরিন মীমের ওপর নির্যাতন করতেন স্বামী গোলাম মোস্তফা হীরা। নির্যাতন মেনে নিয়েই সংসার করে আসছিলেন মীম। সম্প্রতি বিবাহিত এক মহিলার সঙ্গে পরকীয়ায় জড়ান গোলাম মোস্তফা হীরা।

বিষয়টি তানজিলা নাসরিন মীম জানতে পেরে স্বামী হীরাকে বোঝানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু হীরা কোনো কথা না শুনে ওই মহিলার সঙ্গে সম্পর্ক চালিয়ে যান। একপর্যায়ে মীম তার স্বামীকে ওই মহিলার সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে বাধা দিলে মীমকে মারপিট করেন স্বামী হীরা।এ নিয়ে মীমকে বাড়ি থেকে বের করে দেন ও এককভাবে ডিভোর্স দেন হীরা। বর্তমানে তানজিলা নাসরিন মীম তার বাবার বাড়িতে অবস্থান করছেন।

তানজিলা নাসরিন মীম বলেন, ২০১৯ সালে আমাদের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। আমাদের সংসারে দেড় বছরের একটি কন্যা শিশু রয়েছে। বিয়ের পর থেকে আমার ওপর নির্যাতন চালায় আমার স্বামী হীরা। মেয়ে হয়ে যখন জন্মেছি তাই সব অত্যাচার মেনে নিয়েই সংসার করে আসছিলাম।

তিনি আরও বলেন, এত কিছু করার পরও হীরা আমার ওপর নির্যাতন করতো। তারপরও সবকিছু মেনে নিয়েছিলাম।

মীম বলেন, আমার স্বামী গোলাম মোস্তফা হীরা একটি বেসরকারী এনজিও ডিএসকেতে চাকুরী করে আটপাড়া উপজেলায় সেখানে তার সাথেই চাকুরী করে বিবাহিত এক মহিলার সঙ্গে গভীর পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে হীরা। হীরাকে অনেক বোঝানোর চেষ্টা করেছি। কিন্তু কিন্তু ওই মহিলার সঙ্গে সম্পর্ক রাখবেই সে। আমি বাধা দিলে আমাকে মারপিট করে। কয়েক দিন আগে ওই মহিলাটিকে নিয়ে আমার সঙ্গে হীরার ঝগড়া হয়। ঝগড়ার সময় লোহার রড দিয়ে আমাকে মারপিট করে হীরা। এতে আমি অজ্ঞান হয়ে পড়ি।

তিনি বলেন, আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে হীরা, প্রায় ৫০ বছর বয়সী দিলোয়ারা দিলু নামের এক মহিলার সাথে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক হীরার, যা প্রকাশে আসলে আমি থাকে বাধা দিলে সে আমাকে মারধর করে। আমি এখন আমার কন্যা শিশুকে নিয়ে বাবার বাড়িতে আছি,আমি আমার মেয়ের ভবিষ্যত নিয়ে দূরচিন্তায় আছি। এখন সে বলে বেড়ায় আমাকে ডিভোর্স দিয়েছে, কিন্তু আমি এখন পযর্ন্ত কোনো ডিভোর্স লেটার গ্রহণ করি নাই।সে আমাকে হুমকি দেয় আমি যদি মামলা করি তাহলে আমাকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেবে। যার জন্য এতো কিছু করলাম আজ সে আমাকে রাখবে না। আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি তার জন‍্যে।

মীমের বাবা তোতা মিয়া বলেন, মেয়েকে সুখে রাখতে হীরার জন্য অনেক কিছু করেছি। তারপরও সে আমার মেয়ের ওপর নির্যাতন করে। বিষয়টি নিয়ে অনেকবার সালিশ হয়েছে। কিন্তু সালিশে হীরা সব অপরাধ স্বীকার করে মাফ চেয়ে পার পেয়ে যায়। বাড়ি গিয়ে আবার আমার মেয়ের ওপর অত্যাচার চালায়।

দূর্গাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বলেন, হীরা ও মীমের বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার সালিশ করেছি আমিসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।হীরা সালিশ-বৈঠকে সব স্বীকার করে। কিন্তু বাড়ি গিয়ে আবার সেই আগের মতোই মীমকে মারপিট করে। সম্প্রতি মীমকে মারপিট করে হীরা। হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে ও হয়েছে অনেক বার মীমকে। শুনেছি হীরার একটি মহিলার সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্ক আছে। ওই বিষয়টি নিয়েই তাদের ঝামেলা। অনেকবার তাকে বুঝিয়েছি হীরা কথা শোনে না। এখন তার কোনো বিষয়ে আমি নেই।

অভিযুক্ত স্বামী গোলাম মোস্তফা হীরা বলেন, ‘আমি মীমকে নির্যাতন করি বিষয়টি সঠিক নয়। তাহলে আপনার বাড়ি থেকে চলে গিয়ে বাবার বাড়িতে কেন থাকে কি কারণে এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, তার বাড়ির লোকজন এসেছিল আমার বাড়িতে তাদের সঙ্গে সে চলে গেছে আর আমি এখন থাকে ডিভোর্স দিয়ে দিয়েছি তার সঙ্গে এখন আর আমার কোনো স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক নেই,এই প্রতিনিধি বলেন, স্ত্রীর সাথে সম্পর্ক নাই মানলাম কিন্তু আপনার তো দেড় বছর বয়সের একটি কন্যা শিশু রয়েছে তার ভরনপোষণের দায়িত্ব ভার কে নিবে জানতে চাইলে হীরা বলে এটা আমার জানার বিষয় না, এই প্রতিনিধি হীরাকে বলেন মেয়ে কি আপনার না,উত্তরে হীরা বলে মেয়ে তো আর আমার কাছে থাকে না সে তার মায়ের কাছে থাকে,দেখি চিন্তা ভাবনা করে কি করা যায়।

পরকীয়ার বিষয়ে হীরা বলেন, মীমকে বলেছি আমার অন্য মহিলার সঙ্গে সম্পর্ক আছে প্রমাণ দেখাও। মীম কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেনি। বাড়ি থেকে বের করে দেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেইনি। সে একলা একলাই বাড়ি থেকে চলে গেছে।

এ বিষয়ে বেসরকারী এনজিও ডিএসকের পরিচালক ড. দেবালক সিং বলেন, হীরা ও মীমের পারিবারিক সমস্যা দীর্ঘদিনের। একাধিকবার বিষয়টি নিয়ে সালিশ করা হয়েছে শুনেছি। কিন্তু তারা সংশোধন হয়নি। কয়েক দিন আগে মীম আমাকে ফোনে জানিয়েছিল তাকে হীরা বিভিন্ন সময় মারধর করে।দেখি কি করা যায়। বিষয়টি নিয়ে আমি হীরার সাথে কথা বলবো।
এবং তদন্ত করে দেখি তদন্তে পরকীয়া প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে ডিএসকের পক্ষ থেকে আইনানুগ ব‍্যবস্হা গ্রহণ করা হবে।

 

সোহেল খান দূর্জয়
নেত্রকোনা প্রতিনিধি
২৪.০৯.২০২১

Please Share This Post in Your Social Media

দৈনিক ঢাকার কন্ঠ
© All rights reserved © 2012 ThemesBazar.Com
Design & Developed BY Hostitbd.Com