বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫, ০৩:৪১ অপরাহ্ন
কাজি আরিফ হাসানঃ
ঢাকা, ২১শে ফেব্রুয়ারি(৮ই ফাল্গুন) বঙালি জাতির ইতিহাসের স্মরণীয় এক অধ্যায় ।
ক,খ,ঙ,গ,ঘ,চ,ণ,অ,আ,১,২,৩,৪ বর্ণমালার শব্দ বাঙালি মায়ের শেখানো বাংলা ভাষার অংশ। ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনের দানাবাঁধে। বাংলাদেশে ভাষার জন্য লাখো শহিদের জীবনের বিনিময়ে আসা,আর এই দিনটি পৃথিবীর ইতিহাসে স্মরণীয়।
৫২ এর পাকিস্তানি শাসকরা যখন এ দেশের মায়ে ভাষা বাংলাকে বাদ দিয়ে উর্দুকে রাষ্ট্র ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দিতে চেষ্টা করলো সে সময় এ দেশের দামাল ছেলেরা প্রতিবাদে ফেটে পড়ে এমতাবস্থায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাঙ্গন থেকে শুরু করে সারা দেশ মায়ের ভাষা বাংলাকে রক্ষার জন্য এবং উর্দু কেনো রাষ্ট্র ভাষা হবে এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ গড়ে তোলে । ঢাকাসহ সারাদেশে এর প্রতিবাদে মিছিল শুরু হয়। আর এ মিছিলের শ্লোগান “রাষ্ট্র ভাষা বাংলা চাই” এক পর্যায়ে পাকিস্তানের শাসকরা মিছিলের ওপর লাঠি চার্জ, টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ ও গুলি বর্ষণ করে, বাঙালি জাতির ওপর বর্বর নির্যাতন ও স্ট্রিমরোল চালায় এবং সে সময় পাকিস্তানি বাহিনী গুলিতে ভাষার জন্য প্রতিবাদে সালাম,বরকত,রফিক,জব্বার,শফিউরসহ নাম না জানা আরও অনেকেই দিয়ে জীবন দেয়। বুকের তাজা রক্তে রঞ্জিত হয় রাজ পথ।
এই প্রথম কোনো দেশে মায়ের ভাষা রক্ষার জন্য এতো মানুষের মৃত্যু হয় যা ইতিহাসে স্মরণীয়। কারন এ বাংলা ভাষা বাঙালি জাতির মায়ের ভাষা,বাবা আর্তনাদ,বোনে কান্না,সন্তান হারানো বেদোনা। আজ এ দিন ২১শে ফেব্রুয়ারি হিসেবে আমরা সেই সব শহিদদের স্মরণ করি। ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পাশে মাথা উচু করে দাঁড়িয়ে থাকা ঐতিহাসিক জাতীয় কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারসহ সারা দেশে শহিদ মিনারে ভাষা শহদীদে ফুল দিয়ে আজও স্মরণ করে বঙালি জাতি।এ দিন মধ্যরাত থেকে সারা দেশের ছাত্র,জনতা,শিক্ষক, রাজনীতিবিদ,বুদ্ধিজীবী,কবি,লেখক,সাহিত্যিক,শিল্পী সমাজসহ সব শ্রেনির সাধারন মানুষ তাদের স্মরণ করে শ্রদ্ধা জানাতে ফুল নিয়ে আসতে থাকে ঐতিহাসিক শহীদ মিনারে।
শহিদ মিনারে বীর শহিদদের স্মরণ করে শ্রদ্ধা করা বাঙালি জাতির জন্য এক ঐতিহাসিক অধ্যায়।”আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙ্গানো, একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি” এই গানটি বছর ঘুরে আসলেই এই দিনটিতে বার বার মোনে বেজে ওঠে। এই ভাষা সৈনিকদের আমরা শুধু ২১ শে ফেব্রুয়ারি এই দিনটি নয় তাদেরকে বাঙালি জাতি আজীবন স্মরণ রাখবে এবং তাদের জন্য আমরা বাঙালি জাতি প্রান ভরে দু’হাত তুলে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বাঙালি জাতি। যে সব লাখো শহিদরা হাসি মুখে পাকিস্তানি জালিমদের কবল থেকে মায়ের ভাষা রক্ষার জন্য নিজেদের জীবন দিয়ে গেছেন তাদের ঋণ কখনোই ভোলার নয়।
এদেশের ভাষা সৈনিকরা আমাদের গর্ব আমাদের অহংকার। অমর ২১ শে বাঙালি জাতির এক স্মরণীয় অধ্যায়। এখনো পর্যন্ত যে সব ভাষা সৈনিকরা বেঁচে আছেন এবং বয়সে ভারে ভারাক্রান্ত তাদেত প্রতি বাঙালি জাতি আজীবন শ্রদ্ধা থাকবে । শহীদরা আজীবন চীর অমর হয়ে থাকবেন বাঙালি জাতির প্রানে। সেই সঙ্গে গত ২০২৪ সালে জুলাই- আগস্টে স্বৈরাচার হটাও গনঅভ্যুত্থান আন্দোলনে যারা অকাতরে নিজেদের জীবন দিয়ে শহীদ হয়েছে এবং প্রমান করছে বাঙালি জাতি কোনো নির্যাত,নিপীড়ন সহ্য করে না সে সব শহীদদের প্রতিও গভীর শ্রদ্ধা জানাবে এই বাঙালি জাতি,সে সব শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা রইলো। আজ এই মহান ২১শে ফেব্রুয়ারি সম্পর্কে নতুন প্রজন্মকে সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে হবে এই হউক আমাদের প্রত্যাশা।