বৃহস্পতিবার, ১৭ Jul ২০২৫, ০২:৫৩ পূর্বাহ্ন
কাজি আরিফ হাসান:
দেশের মানুষকে দেশের বিগত ইতিহাসকে ভুলে গেলে চলবে না। এদেশে উপনিবেশিক শাসন আমল থেকে অদ্য পর্যন্ত দেশের মধ্যে হাজার স্মৃতি বিজড়িত ঘটনা ঘটে গেছে এবং আজ চলমান। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ৬৯ এর গনঅভ্যুত্থান ও ৭১ এর দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ, ও ত্যাগে স্বাধীনতা পর এদেশের মুক্তিকামি জনত পেয়েছে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র। স্মররণকরতে হবে ৯০এর গনঅভ্যুত্থান ।
১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে মধ্য দিয়ে এই ৫৪ হাজার বর্গমাইলের মধ্যে দেশের জন্য অনেক নেতাও গড়ে উঠেছিলেন,তাদের আত্মত্যাগ কখনোই ভোলার নয়,তাদের মধ্যে তাজ উদ্দিন আহম্মেদ,সৈয়দ নজরুল ইসলাম, আব্দুল হামিদ খান ভাষানিসহ শেখ মুজিব রহমান। ইতিহাসের পেছনে ফিরে তাকালে দেখা যায় বিশ্বের তালিকায় প্রথম নেতা নেনসন ম্যান্ডেলা ও দ্বিতীয় স্থানে শেখ মুজিব রহমান অবস্থা করছেন। এদেশে শেখ মুজিব রহমান ও জাতীয় ৬ নেতার অবদান কোনো কালেই ভোলার নয়।
১৯৭১ এর স্বাধীনতার পর ৭৫ এ শেখ মুজিব রহমান নিয়ে এই স্বাধীন বাংলাদেশে সরকার গঠন হয় এবং ১৯৭৫ এর ১৫ ই আগস্ট কালো অধ্যায়ের মধ্য দিয়ে শেখ মুজিব রহমানের অধ্যায় সমাপ্তি হতে দেখা যায়। এর পর একে একে এরশাদ(সামরিক শাসন) সরকারের শাসন,বিএনপির শাসন অবশেষে ২০০৬ সালে আওয়ামিলীগ সরকারের আগমন এবং ২০২৪ সালে দীর্ঘ বছর স্বৈরাচার শাসন কায়েম করার মধ্য দিয়ে গত ২০২৪ সালে জুলই- আগস্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার বিপ্লবের মধ্য দিয়ে ৫ই আগস্ট আওয়ামিলীগ সরকারের পতন ঘটে। এর মাঝে দীর্ঘ ১৭ টি বছর এই স্বৈরাচার সরকারে দলীয়করণ ও তোষামোদদের আত্মগোপনে হতে দেখা যায়।
এদিকে আওয়ামী সরকারে চলে যাওয়ার পর ড.ইউনুসকে নিয়ে গঠিত হয় অন্তর্বর্তী সরকার,আর এই সরকারের বলছে বিগত সরকারে স্বৈরাচার হয়ে ওঠার পেছনে কিছু দালাল মিডিয়াও সহযোগিতা করে এবং তার আরো বলছেন,বর্তমান মিডিয়া স্বাধীন এবং সব কিছুই তুলে ধরতে পারে,আর এদিকে মিডিয়ার অনেকেই বলছেন,আদৌ কি মিডিয়া স্বাধীন? তারা আদৌ কি স্বৈরাচারের কবল থেকে মুক্ত হয়েছে নাকি দেশে যে সরকার যখন দেশ শাসন করে মিডিয়া তাদেরই তোষামোদি করে? অনেক প্রশ্ন সাধারণ জনতার মধ্যে,এদিকে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের অনেকেই এবং গনঅভ্যুত্থানের সমন্বয়করের অনেকেই এদেশে ৭১ স্বাধীনতাকে স্বীকার করেন না কেনো?
আর এ অস্বীকার করায় দেশের মধ্যে বিশৃঙ্খলা বিরাজ করতে দেখা যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। শুধু তাই নয় স্বৈরাচার আমলে যেভাবে অপরাধ, দুর্নীতি দেশের মধ্যে বিরাজ করেছিলো ঠিক তেমনই ৫ আগস্টে পর নৈরাজ্য,হত্যা,লুন্ঠন,চাঁদাবাজি,দখলবাজির মাত্রা কোনো অংশে কমতে দেখা যায়নি,এগুলো অচিরেই বন্ধ করতে হবে। ৫ আগস্টের পর পুলিশ সদস্যদের হত্যা,থানা ভাঙচুর ও থানা থেকে অস্ত্র লুঠ এগুলোও সামনে আনতে হবে এবং দেশের আইনশৃঙ্খলাকে সঠিক পথ পরিচালিত করে দেশের মধ্যে নৈরাজ্য বন্ধ করতে হবে। আমাদের সামনে বিশ্বের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ,তথ্য নিয়ে জানা গেছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক হিসাবে অনুযায়ী দেশর বর্তমান রিজার্ভ বেড়ে দাড়িেছে ৩১ দশমিক ৬৮ বিলিয়ন ডলারে(৩০ জুন পর্যন্ত) যা প্রবাসী যোদ্ধাদের গুরুত্বপূর্ণ অবদান,সেই সঙ্গে দেশে বিগত বছরে মুখ থুবড়ে পড়ে থাকা শিল্প(পাট,চিনি,চামড়া,নিউজপ্রিন্ট) গুলোকে পুনরায় ফিরিয়ে আনা দেশের জনগনের আশা। আর এই চ্যালেঞ্জকে মোকাবিলা করা বাংলাদেশের গনতন্ত্রে নতুন অধ্যায় সূচনা রাখতে পারে ভবিষ্যতে।
দেশের মধ্যে নিরব অরাজক রোধ করে বাংলাদেশের ইতিহাসকে মনে রেখে এবং দেশে গনতন্ত্র ঠিক রেখে সাংবিধানিক নীতি অনুযায়ী অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের মধ্য দিয়ে গনতন্ত্রকে পুনরুজ্জীবিত করে করে এগিয়ে যেতে হবে সামনের দিকে। তাই অন্তর্বর্তী সরকারে কাছে দেশবাসীর চাওয়া সংস্কার সংস্কার বুলি না ছেড়ে প্রয়োজনীয় সংস্কার করে যতদ্রুত সম্ভব জাতীয় সংসদ নির্বাচন দিয়ে গনতন্ত্রে ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে।