শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১০:১৮ পূর্বাহ্ন
রফিকুল হক শিকদার জাহাঙ্গীর
্
খেলাপি ঋণগ্রহীতার জামিনদার হওয়ার কারণে সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মনোনয়ন বাতিল করেছে রিটার্নিং কর্মকর্তা । তবে, মনোনয়ন ফিরে পেতে আপিল ও হাইকোর্টে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন গাজীপুরের সাবেক এই মেয়র। রোববার (৩০ এপ্রিল) মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের প্রথম দিনে তার উপস্থিতিতে এই সিটির রিটার্নিং কর্মকর্তা এই আদেশ দিলেন।
এই সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে মনোনয়ন জমা দেওয়া আওয়ামী লীগ থেকে বহিঃস্কৃত নেতা জাহাঙ্গীর আলমের মা জায়েদা খাতুন প্রার্থী হতে পারবেন।
মনোনয়ন বাছাইয়ের সময় রিটার্নিং কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম বলেন, জাহাঙ্গীর আলম এই নির্বাচনে যে সমস্ত কাগজপত্র দাখিল করেছেন তার সবকিছু সঠিক পাওয়া গেছে। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের সিআইবি রিপোর্ট অনুযায়ী তিনি যে প্রতিষ্ঠানের জন্য জামিনদার হয়েছিলেন সেই প্রতিষ্ঠানটি ঋণ খেলাপি হওয়ায় তাঁর মনোনয়ন বাতিল করা হলো।
এ সময় জাহাঙ্গীর আলম রিটার্নিং কর্মকর্তার উদ্দেশ্যে বলেন, উচ্চ আদালতের আদেশ অনুযায়ী জামিনদার কখনো ঋণ খেলাপি হয় না। তাছাড়া খেলাপি ঋণগ্রহীতা প্রতিষ্ঠান ঋণ পুনঃতফসীলীকরণের জন্য ইতোমধ্যে কিস্তির টাকা জমা দিয়েছে এবং আবেদন করেছেন। আমি একটি শিল্প প্রতিষ্ঠানকে বাঁচানোর জন্য মানবিক কারণে আমি আমার নিজের জমি বন্ধক রেখেছিলাম। আমি ওই টাকা নিজের জন্য নেইনি এবং প্রতিষ্ঠানটি ঋণের টাকা পরিশোধ করেছে।
তিনি আরও বলেন, আমি ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছি। আমি নির্বাচন কমিশনের রিটার্নিং কর্মকর্তার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, যেহেতু আপনারা ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে ডেকেছেন, ব্যাংক তাদের লিখিত জবানবন্দি দিয়েছে। কিন্তু আপনারা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তা নির্বাচনকে নিরপেক্ষতা প্রমাণ করে না। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ যারা পাওনাদারের কাছ থেকে টাকা পেয়েছে। তারপরও আপনারা যে কাজটি করলেন তা পক্ষপাতিত্ব করলেন। আপনারা নির্বাচনে নিরপেক্ষতার মধ্যে ছিলেন না। আমরা আশা করব যেন নিরপেক্ষতা আপনাদের থাকে। সব প্রার্থীকে যেন সমান সুযোগ দেওয়া হয়। আপনারা নিরপেক্ষতা থেকে সরে গেছেন। আমি অনুরোধ করব, এখানে আপনারা নিরপেক্ষ নির্বাচন করেন, মানুষের সংগ্রহ মূলক নির্বাচনটা করেন।
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, কোনাবাড়ির একটি কম্পোজিট ফ্যাক্টরী যেখানে হাজার হাজার শ্রমিক কাজ করতো। কোরিয়ার মালিকানাধীন ওই কারখানার আমি লভ্যাংশ খাইনা, শেয়ার নেই, শুধু শ্রমিকদের বাঁচাতে, পোশাক শিল্প বাঁচাতে মানবিক কারণে আমি আমার সম্পত্তি থেকে মর্গেজ দেই। যার ঋণ নিয়ে কোরিয়ন কর্তৃপক্ষ কারখানা সচল রেখেছিল। কিন্তু করোনা ও ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে তারা পেমেন্ট দিতে পারে নি। কিন্তু নির্বাচনে আমি যেহেতু প্রার্থী তাই তারা ১১ এপ্রিল ও ১৮ এপ্রিল অগ্রণী ব্যাংকের পাওনা পরিশোধ করেছে। সব ডকুমেন্ট আমি আমার আইনজীবীর মাধ্যমে জমা দিয়েছি কিন্তু তারপরও তারা আমার প্রার্থিতা বাতিল করেছে। আমি মনে করি এখানে নির্বাচন কমিশন তাদের নিরপেক্ষতা থেকে সরে গেছেন। কোন অদৃশ্য চাপে তারা সরে গেছেন তা আমি জানি না। আমি ন্যায় বিচারের স্বার্থে আপিল করব। আমি হাইকোর্টে যাব, সুপ্রিম কোর্টে যাব।
এ সময় তিনি দেশবাসীর কাছে প্রশ্ন করেন আমি নির্বাচন কমিশনের কাছে ন্যায়বিচার আশা করতে পারি কিনা? আমি তা দেশবাসীর কাছে জানতে চাই।
মনোনয়নপত্র বাছাই অনুষ্ঠানে রিটার্নিং কর্মকর্তা ছাড়াও নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তা বিভিন্ন ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাগণ এবং নির্বাচনে মনোনয়ন দাখিলকারী অন্যান্য মেয়র, কাউন্সিলর প্রার্থীগণ উপস্থিত ছিলেন।