রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০৩:০৫ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনামঃ
লোকসভার প্রার্থী সৌমেন্দু অধিকারীর সমর্থনে, অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তীর রোগ শো জানতাম না এত বড় দায়িত্ব নিতে হবে: শেখ হাসিনা গাজীপুরে শ্রীপুর উপজেলা কেনো বাতিল হলো প্রতিমন্ত্রীর ভাইয়ের প্রার্থিতা লালমনিরহাটে সেপ্টিঠ্যাংকিতে পড়া ছাগল উদ্ধার করতে গিয়ে ১ জন নিহত ও আহত ১ উত্তরায় ‘৩২‘রত্মগর্ভা মা’কে বিশেষ সম্মাননা প্রদান উত্তরায় বিআরটি প্রকল্পের প্রকৌশলীকে পিটিয়ে মেরে ফেললো, প্রধানমন্ত্রী টুঙ্গিপাড়ায় যাচ্ছেন শুক্রবার ভারতরত্ন বাবা সাহেব ডক্টর বি. আর আম্বেদকরের ১৩৩ তম জন্ম দিবস পালিত হলো আজ হজ কার্যক্রম উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী বিদেশ থেকে ফিরে গ্রেপ্তার, ২ দিনের রিমান্ডে কাচ্চি ভাইয়ের মালিক

রাজশাহী গোদাগাড়ীতে কমে যাচ্ছে চারণ ভূমি, গো-খাদ্য সংকটে গৃহস্থ ও খামারিরা

 

নিউজ দৈনিক ঢাকার কন্ঠ 

রবিউল ইসলাম মিনাল, রাজশাহীর, গোদাগাড়ী জিলা প্রতিনিধি ।।

 

রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে কমে যাচ্ছে চারণ ভূমি, গো-খাদ্য সংকটে গৃহস্থ ও খামারিরা। রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে জমি পতিত না থাকায় গো-চারণ ভূমি তীব্র অভাব দেখা দিয়েছে। ফলে সংকট দেখা দিয়েছে গো-খাদ্যের। বিভিন্ন অঞ্চল থেকে উচ্চ মূল্যে খড়, বিচালি কিনে গো-খাদ্যের চাহিদা পূরণ করতে হচ্ছে খামারি ও গৃহস্থদের। এতে করে কৃষক ও গো-খামারিরা হিমশিম খাচ্ছেন।

গবাদিপশু পালনে নানা প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে হচ্ছে তাদের। অনেকে গো-খাদ্য সংকটের কারণে গরু ছাগল বিক্রি করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন। উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চল ঘুরে দেখা যায়, মানুষেরা জীবন-জীবীকার তাগিদে গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া পালন করেন। এসব গবাদিপশু খাদ্যের প্রধান উৎস চারণ ভুমির প্রাকৃতিক খাবার। জমিতে বাণিজ্যিকভাবে বিভিন্ন ফসল আবাদ বেড়ে যাওয়ায় কমে আসছে গো-চারণ ভূমি, কমে যাচ্ছে প্রাকৃতিক খাদ্যের উৎস। গো-চারণ ভূমির সংকটের ফলে দেখা দিচ্ছে গো-খাদ্যের সংকট।

উপজেলার বোগদামারী গ্রামের লালু। নিজের^ সম্পদ বলতে তার রয়েছে ৫টি গরু। প্রতিবছর গরু বিক্রি করে সংসারের পুরো ব্যয় বহন করে থাকেন তিনি। এভাবে প্রায় দুই যুগ ধরে গবাদিপশু লালন-পালনের উপর নির্ভর করেই চলছে তার সংসারের প্রয়োজনীয় চাহিদাসহ সন্তানদের পড়ালেখার খরচ। তবে, চারণ ভুমির অভাবে প্রাকৃতিকভাবে গজিয়ে ওঠা বিভিন্ন ধরণের গো-খাদ্য হ্রাঁস পাওয়ায় চরম দুঃশ্চিন্তায় পড়েছেন তিনি।

পতিত জমির অভাবে কেনা গো-খাদ্যের উপর নির্ভর করে গো-খাদ্যের চাহিদা মেটানো কঠিন হয়ে পড়েছে লাল মোহাম্মদের মতো এনামুল, করিমসহ অনেকের। এতে করে উপজেলার গবাদিপশু লালন-পালনের উপর নির্ভরশীল পরিবার গুলো চরম বেকায়দায় পড়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে বাজার থেকে গবাদিপশুর খাদ্য কিনে গরু মোটাতাজাকরণ ও দুধ উৎপাদন করছেন তারা। তবে সবচেয়ে বেকায়দায় পড়েছেন গো-খামারিরা। খামারি রেজাউল জানান, কয়েকদিন পর পরই গো-খাদ্যের মূল্য বেড়ে যাচ্ছে। এ কারণে গবাদিপশু লালন-পালনে গুণতে হচ্ছে বাড়তি টাকা। দানাদার খাবারের মূল্য উর্ধমূখী এবং দুধের বাজার মূল্য কম হওয়ায় খামার টিকিয়ে রাখা কষ্টকর হয়ে পড়েছে।
আরিফ জানায়, বরেন্দ্র অঞ্চলে পতিত জমি না থাকায় পদ্মা নদীর বুকে জেগে উঠা চরে প্রাকৃতিকভাবে গজিয়ে ওঠা বিভিন্ন ধরণের গো-খাদ্যের উপর নির্ভর করে গরু-মহিষ, ছাগল ও ভেড়া লালন পালন করতাম। গত কয়েক বছর থেকে পদ্মা নদীর বুকে জেগে উঠা চরে আবাদ হওয়ায় প্রাকৃতিকভাবে গজিয়ে ওঠা বিভিন্ন ধরণের গো-খাদ্যের অভাব দেখা দিয়েছে। নিজেরাই গরু লালন-পালন করি। আমাদের সারা বছর গরুর দুধ, গোবর বিক্রি করে কোনরকম সংসার চলে। কিন্তু খাদ্য সংকটের কারণে গরু, ছাগল নিয়ে বিপাকে আছি। খড় দাম আগের চাইতে অনেক বেড়ে যাওয়ায় গরু ছাগল প্রতিপালন আমাদের জন্য কষ্টকর হয়ে পড়েছে।

একটি স্থানীয় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা জানান, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে চরাঞ্চলে প্রাকৃতিকভাবে জন্মানো গাছপালা কমে যাচ্ছে। আর এর প্রভাব পড়ছে প্রানীকুলে। বিশেষ করে গবাদিপশু লালন-পালনের উপর নির্ভরশীল পরিবারগুলোর জীবন-জীবিকায় নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ সুব্রত কুমার সরকার জানান, মানুষজনের অন্যতম সম্পদ গবাদিপশু। প্রকৃতির উপর নির্ভর করে গাছপালা ও ঘাস খেয়ে এখানকার গরু, মহিষ, ভেড়া, ছাগল বেড়ে ওঠে। চারণ ভুমি কমতে থাকায় বিকল্প হিসেবে উন্নত পদ্ধতিতে ঘাস চাষের প্রশিক্ষণ ও সহায়তা দেয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, দানাদার খাবারের মূল্য উর্ধমূখী হওয়ায় গো-খাদ্যর সংকট মোকাবেলায় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর থেকে বিনা মুল্যে উন্নতজাতের ঘাসের কাটিং দেওয়া হচ্ছে। যে সকল গৃহস্থ ও খামারিদের জমি আছে তারা ঘাষ চাষ করে দানাদার খাবার কমিয়ে গবাদিপশুকে ঘাষ খাওয়ালে আর্থিকভাবেও লাভবান হবেন।

 

Please Share This Post in Your Social Media

দৈনিক ঢাকার কন্ঠ
© All rights reserved © 2012 ThemesBazar.Com
Design & Developed BY Hostitbd.Com