রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:৫৭ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনামঃ
আজ স্বর্গীয় সতিন্দ্র লাল দাশ গুপ্তের ৯তম মৃত্যু বার্ষিকী সরিষাবাড়ীতে নির্বাচনী আচরণ বিধি লংঘনের অভিযোগে দুই আওয়ামী লীগ নেতা গ্রেফতার সাংবাদিক হয়রানি মিথ্যা মামলা ও নির্যাতনের প্রতিবাদে উত্তরায় মানববন্ধন  জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন গাছা থানা কমিটির অনুমোদন উড়িষ্যা থেকে কলকাতা ফেরার পথে ,ব্রীজ থেকে উল্টে পড়লো যাত্রীবাহী বাস যুক্তরাজ্য শেফিল্ড আওয়ামী লীগের ইফতার ও দোয়া মাহফিল উত্তরা সেন্ট্রাল প্রেসক্লাবের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত  “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কে আন্তরিক ধন্যবাদ” নাটোর বড়াইগ্রামে ভুয়া এএসআই আটক ঢাকার এক বাড়িওয়ালা অনন্য নজির স্থাপন করলেন

আইনের দৃষ্টিতে একজন অ্যাডভোকেট ও ব্যারিস্টারের মধ্যে পার্থক্য

প্রকাশ, ঢাকার কন্ঠ 

লেখকঃ এস এম মনিরুজ্জামান আকাশ

একজন অ্যাডভোকেট হলেন

যিনি বাংলাদেশের ফৌজদারী ও দেওয়ানী আদালতে বাদী/প্রতিবাদী, বিচার প্রার্থী ও বিবাদী পক্ষে যুক্তি তর্ক প্রতিকার প্রার্থনায় কথা বলে থাকেন।

সংজ্ঞায়িত করে বলা যেতে পারে যে, অ্যাড অর্থ হলো যোগ করা আর ভোকাল শব্দের অর্থ হলো কন্ঠ দেওয়া, মক্কেলের পক্ষ কথা বলা।

অর্থাৎ অ্যাডভোকেট হলেন যিনি অপরের পক্ষে নিজের কথা যোগ করেন এবং আদালতে বা সংশ্লিষ্ট স্থানে তা প্রেজেন্ট করেন।

একজন অ্যাডভোকেট তিনি আদালতের একজন আইন কর্মকর্তা।

সমাজের সম্মানিত নাগরিক।

একজন অ্যাডভোকেট সমাজে চলতে ফিরতে সর্বাগ্রে তিনি একজন অ্যাডভোকেট এই পরিচয় প্রদান করতে হবে!

অ্যাডভোকেট হতে হলে কোন শিক্ষার্থীকে মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করার পরে আইন বিষয়ে স্নাতক(অনার্স) ডিগ্রী অর্জন অর্জন করতে হয়।

আর যে কোন বিষয়ে অনার্স/স্নাতক সনদ থাকলে দুই বছরের এলএলবি সনদ অর্জন করে অ্যাডভোকেট হিয়ার যোগ্যতা অর্জন করা যায়।

পরবর্তীতে কিছু অনুস্মরনীয় ধাপ অতিক্রম করে একজন নাগরিক অ্যাডভোকেট হতে পারেন।

বাংলাদেশের যে কোন আদালতে/বারে কমপক্ষ দশ বছরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন কোন একজন অ্যাডভোকেটের অধীনে

ছয় মাসের শিক্ষানবীশ কাল অতিক্রম করতে হয় পাঁচ টি ফৌজদারী ও পাঁচ টি দেওয়ানী মামলা চর্চা করে।

তারপর বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের অধীনে প্রথম ধাপে ১০০ নম্বরের প্রিলিমিনারী পরীক্ষায় (নেগেটিভ মার্ক বাদে) ৫০ নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হতে হয়। এরপর দ্বিতীয় ধাপে ১০০ নম্বরের মধ্যে ৫০ নম্বর পেয়ে লিখিত পরীক্ষায় পাশ করে তৃতীয় ধাপে ৫০ নম্বরের মধ্যে ২৫ নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হয়ে বার কাউন্সিল সনদ অর্জন করার পরে গেজেটে নাম প্রকাশিত হওয়ার পরে অ্যাডভোকেট হিসেবে তিনি পরিচয় দিতে পারেন।

অপর পক্ষে যিনি ইংল্যান্ডের আদালতে (অস্টোলিয়া) আইন পেশায় নিজেকে নিয়োজিত করেন তাকে ব্যারিস্টার বলে অভিহিত করা হয়। আমেরিকার আদালতে যারা প্র্যাকটিস করেন তাদের কে এটর্নী বলে অভিহিত করা হয়।

একজন ব্যারিস্টার হতে হলে মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পরে আইন বিষয়ে ইংল্যান্ড থেকে ডিগ্রী নিয়ে নিম্নোক্ত চারটি প্রতিষ্ঠানের (লিংকনস্ ইন, গ্রেইস ইন,ইনার টেম্পল ইন,মিডল টেম্পল ইন) যে কোন টি থেকে উত্তীর্ণ হতে হবে তবেই তাকে ব্যারিস্টার বলা হয়।

বাংলাদেশ বার কাউন্সিল উত্তীর্ণ হয়ে যে সকল বিজ্ঞ লার্নেড অ্যাডভোকেট মহোদয়গন সনদ লাভ করেছেন! তারাও ব্যারিস্টার এট ল সনদ অর্জন করতে পারেন!

তাদের কে ইংল্যান্ডের নির্ধারিত প্রতিষ্ঠান থেকে বিটিটি(BTT) সনদ অর্জন করতে হবে, যাতে সময় লাগে ৪ থেকে ৬ মাস।

যে সকল শিক্ষার্থীগন ব্রিটিশ ল পড়েছেন ব্রিটেনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধীনে এলএলবি (LLB) ডিগ্রী অর্জন করেছেন তাদের কে লিংকনস্ ইনঃ

গ্রেইস ইনঃ

ইনার টেম্পল ইনঃ

মিডল টেম্পল ইনঃ থেকে

৯ মাস মেয়াদী BPTC

কোর্স করতে হয়। এই কোর্স করার পর সেখানকার প্রতিষ্ঠান থেকে তাদের যে সনদ দেওয়া হয়, সেই সনদ নিয়ে ব্রিটেনের আদালতে প্র্যাক্টিস করতে পারেন এবং তখন তাদের কে ব্যারিস্টার বলে অভিহিত করা হয়।

ইংল্যান্ড, ওয়েলস, আয়ারলান্ড ও স্কটল্যান্ড মিলে যুক্তরাজ্য বা UK (United Kingdom)

যুক্তরাজ্যের আদালতে যারা আইন পেশায় নিয়োজিত বা আইন চর্চা করেন তাদের কে সহজ ভাষায় ব্যারিস্টার বলা হয় এবং যারা আদালতের বাইরে আইন পেশা নিয়ে কাজ কর্ম করে থাকেন তাদেরকে সলিসিডার বলা হয়ে থাকে।

একজন ব্যারিস্টার যখন যুক্তরাজ্য থেকে সনদ অর্জন করে বাংলাদেশে ফিরে আসেন, তখন ব্যারিস্টার মহোদয়কে বাংলাদেশ বার কাউন্সিল কর্তৃক নির্ধারিত ৩ ধাপের পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হয় এবং উত্তীর্ন হওয়ার পরই কেবল বাংলাদেশের কোন আদালতে বা কোন প্রতিষ্ঠানে প্র্যাক্টিস করতে পারেন নচেৎ নয়!

তাই আমরা অনায়াসে বলতে বা ভাবতে পারি যে, একজন অ্যাডভোকেট ও একজন ব্যারিস্টার বাংলাদেশের আইন আদালতে আইন চর্চা বা প্র্যাক্টিস করার জন্য কম-বেশ করে দেখার সুযোগ নেই!

তবে একজন ব্যারিস্টার যেহেতু ব্রিটিশ ল (LLB, LLM) কোর্স করে (BPTC) কোর্স করে ব্যারিস্টারী ডিগ্রী লাভ করেন, সেহেতু তাকে সম্মান করা হয় অ্যাডভোকেট থেকে একটু আলাদা করে। যেহেতু ব্রিটেনের আদালতেবপ্র্যাক্টিস করার যোগ্যতা ব্যারিস্টারের বাড়তি যোগ্যতা হিসেবে মুল্যায়ন করা হয়ে থাকে।

কিন্তু বার কাউন্সিল সনদ না থাকলে একজন ব্যারিস্টারও বাংলাদেশের আদালতে প্র্যাক্টিস করার অযোগ্য বলে বিবেচিত হন।

লেখকঃ এস এম মনিরুজ্জামান আকাশ

শিক্ষাার্থী, আইন বিভাগ,ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়,কুষ্টিয়া।

Please Share This Post in Your Social Media

দৈনিক ঢাকার কন্ঠ
© All rights reserved © 2012 ThemesBazar.Com
Design & Developed BY Hostitbd.Com