সংবাদ শিরোনাম
পিসিএনপির নতুন নেতৃত্ব নির্বাচিত: সভাপতি কাজী মজিবর রহমান ও মহাসচিব মোঃ শাব্বির আহমেদের দায়িত্ব গ্রহণ. বিজিবি’র বিরুদ্ধে অপপ্রচারের নিন্দা ও প্রতিবাদ সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা পরিষদের  সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা পরিষদের খাগড়াছড়ি জেলা কমিটি ঘোষণা : মো: কেফায়েত উল্লাহ- সভাপতি ; নূরুল আবছার ভূঁইয়া-সেক্রেটারি দুমকি উপজেলায়, মোটরসাইকেল–-অটোবাইক সংঘর্ষে চালক নিহত, আহত ১।। ফয়জুর সভাপতি, নাজমুল সম্পাদক বড়াইগ্রামে গ্রামীণ শাখা ডাকঘর কর্মচারী ঐক্য পরিষদের কমিটি গঠন তারেক রহমানের ৬১তম জন্মদিনে উত্তরা পশ্চিম থানা বিএনপির দোয়া মাহফিল ও তবারক বিতরণ আগামীকাল ২১ শে নভেম্বর বাংলাদেশ সশস্ত্রবাহিনী ‍দিবস! সাম্প্রতিক আগুনে পুড়ছে দেশ, আতঙ্কে মানুষ: এই সন্ত্রাসের শেষ কোথায়? আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের পক্ষপাতদুষ্ট ও অস্বচ্ছ বিচার প্রক্রিয়া দেশে আইনের শাসনকে ব্যাহত করবে জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধনে প্রথম দুমকি উপজেলা।। 

গ্রেপ্তার আতঙ্কে জনশূন্য মণ্ডলপাড়া গ্রাম নিরপরাধদের হয়রানির অভিযোগে এলাকাবাসীর ক্ষোভ

admin / ১৫ Time View
Update : রবিবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২৫

নিউজ দৈনিক ঢাকার কন্ঠ 

জিয়াউর রহমান জিয়া ,রাজিবপুর (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি:

কুড়িগ্রামের রাজিবপুর উপজেলার কোদালকাটি ইউনিয়নের উত্তর চরসাজাই মণ্ডলপাড়া গ্রামে বিরাজ করছে চরম আতঙ্কের পরিবেশ। গ্রেফতার আতঙ্কে নারী-পুরুষসহ প্রায় পুরো গ্রামের মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। স্থানীয়দের অভিযোগ-অপরাধীর সঙ্গে নিরপরাধ সাধারণ মানুষকেও আটক করছে পুলিশ।

রবিবার (২৬ অক্টোবর) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গ্রামের অধিকাংশ বাড়িঘর ফাঁকা, রাস্তাঘাটে মানুষের উপস্থিতি নেই বললেই চলে। স্থানীয়দের দাবি, পুলিশের নির্বিচার ধরপাকড়ের কারণে গ্রাম এখন প্রায় জনশূন্য।

এর আগে শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) দুপুরে “সরকার উৎখাতের পরিকল্পনা” ও জুলাই সনদ বাতিলের দাবি” সংবলিত পোস্টার টানানোর খবর পেয়ে রাজিবপুর থানা পুলিশ কোদালকাটি ইউনিয়নের উত্তর চরসাজাই মণ্ডলপাড়া এলাকায় অভিযান চালায়। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মসজিদ থেকে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির ছক্কু। পুলিশ তাকে আটক করলে তার আত্মীয়স্বজন ও অনুসারীরা পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে ছিনিয়ে নেয়।

এ ঘটনায় এসআই আতিকুজ্জামান, এসআই গোলাম মোস্তফা, এসআই আরজ আলী, এএসআই আহসান হাবিব, এএসআই জয়ন্ত এবং কনস্টেবল রাশেদুলসহ ছয় পুলিশ সদস্য আহত হন। পরে পুলিশ বাদী হয়ে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে ২০ জনের নাম উল্লেখসহ ৩০০–৪০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা দায়ের করে।

ঘটনার দিন জুমার নামাজ শেষে বাড়ি ফেরার সময় উত্তর চরসাজাই মণ্ডলপাড়া গ্রামের আব্দুল জলিলের ছেলে মো. রহিম আহমেদ (২৫) এবং মৃত আব্দুর রশিদের ছেলে ইয়াকুব আলী (২৫)-কে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর শনিবার (২৫ অক্টোবর) রাতে পুলিশ আরও তিনজন- আব্দুর রশিদ (৫২), নুরুল ইসলাম (৪২) এবং শাহজাহান (৩৫)-কে গ্রেপ্তার করে।

তবে স্থানীয়দের দাবি, গ্রেপ্তারকৃত কেউই ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন।

রহিম আহমেদের শাশুড়ি বলেন,
আমার মেয়ের জামাই রহিম ওইদিন নামাজ পড়তে মসজিদে গিয়েছিল। চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির ছক্কুও সেখানে নামাজ পড়ছিলেন। পুলিশ আসতেই ছক্কু পালিয়ে যায়, পরে তাকে ধরে ফেলে। তখন তার আত্মীয়রা ছক্কুকে ছিনিয়ে নেয়। কিন্তু রহিম কোনো ঝামেলায় যায়নি, তবুও পুলিশ তাকে ধরে নিয়ে যায়।

গ্রেপ্তার নুরুল ইসলামের স্ত্রী নাজমা বলেন,
আমার স্বামী দিনমজুরের কাজ শেষে রাতে বাড়ি ফিরে ঘুমিয়ে পড়েছিল। কোনো অপরাধ না করেও পুলিশ তাকে ধরে নিয়ে গেছে। প্রশাসনের কাছে অনুরোধ-নির্দোষ স্বামীকে যেন ছেড়ে দেওয়া হয়।

একইভাবে শাহজাহানের স্ত্রী সামিয়া জানান,
আমার স্বামী ঘটনার সময় মাঠে কাজ করছিল। রাতে পুলিশ এসে বিনা কারণে তাকে গ্রেফতার করে।

চরসাজাই দাখিল মাদরাসার সহকারী শিক্ষক আমিনুল ইসলাম বলেন,
পুলিশ যেন প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেফতার করে, নিরপরাধ মানুষ হয়রানির শিকার না হয়। যারা ধরা পড়েছে, তারা দরিদ্র মানুষ—দিন না করলে পরিবার অনাহারে থাকে।

গ্রামের বাসিন্দা মো. রঞ্জু বলেন,
পুলিশ যাকে পাচ্ছে তাকেই ধরে নিয়ে যাচ্ছে। এতে পুরো গ্রাম এখন জনশূন্য হয়ে পড়েছে। আমরা চাই-যারা সত্যিই দোষী, শুধু তাদেরই আইনের আওতায় আনা হোক।

এ বিষয়ে রাজিবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শরিফুল ইসলাম বলেন,
আমি এ বিষয়ে কোনো বক্তব্য দেব না, আপনারা যা ইচ্ছা লিখতে পারেন।

এদিকে এলাকাবাসীর দাবি, গ্রেফতার আতঙ্কে অনেকেই এখন অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন। নিরপরাধ মানুষকে যেন হয়রানি না করে প্রকৃত অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়—এমন দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category