সংবাদ শিরোনাম
পিসিএনপির নতুন নেতৃত্ব নির্বাচিত: সভাপতি কাজী মজিবর রহমান ও মহাসচিব মোঃ শাব্বির আহমেদের দায়িত্ব গ্রহণ. বিজিবি’র বিরুদ্ধে অপপ্রচারের নিন্দা ও প্রতিবাদ সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা পরিষদের  সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা পরিষদের খাগড়াছড়ি জেলা কমিটি ঘোষণা : মো: কেফায়েত উল্লাহ- সভাপতি ; নূরুল আবছার ভূঁইয়া-সেক্রেটারি দুমকি উপজেলায়, মোটরসাইকেল–-অটোবাইক সংঘর্ষে চালক নিহত, আহত ১।। ফয়জুর সভাপতি, নাজমুল সম্পাদক বড়াইগ্রামে গ্রামীণ শাখা ডাকঘর কর্মচারী ঐক্য পরিষদের কমিটি গঠন তারেক রহমানের ৬১তম জন্মদিনে উত্তরা পশ্চিম থানা বিএনপির দোয়া মাহফিল ও তবারক বিতরণ আগামীকাল ২১ শে নভেম্বর বাংলাদেশ সশস্ত্রবাহিনী ‍দিবস! সাম্প্রতিক আগুনে পুড়ছে দেশ, আতঙ্কে মানুষ: এই সন্ত্রাসের শেষ কোথায়? আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের পক্ষপাতদুষ্ট ও অস্বচ্ছ বিচার প্রক্রিয়া দেশে আইনের শাসনকে ব্যাহত করবে জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধনে প্রথম দুমকি উপজেলা।। 

রাজবাড়ীতে বিষাদ সিন্ধুর রচয়িতা মীর মশাররফ হোসেনের ১৭৮তম জন্মবার্ষিকী আজ

admin / ১০ Time View
Update : বৃহস্পতিবার, ১৩ নভেম্বর, ২০২৫

নিউজ দৈনিক ঢাকার কন্ঠ 

মোঃ জাহিদুর রহিম মোল্লা জেলা প্রতিনিধি রাজবাড়ী

বাংলা সাহিত্যের অগ্রদূত, মুসলিম সাহিত্য জাগরণের পথিকৃৎ এবং কালজয়ী উপন্যাস “বিষাদ সিন্ধু”–এর রচয়িতা মীর মশাররফ হোসেনের ১৭৮তম জন্মবার্ষিকী আজ (১৩ নভেম্বর) বৃহষ্পতিবার রাজবাড়ীতে বর্ণাট্য আয়োজনে উদযাপিত হচ্ছে।

রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়নের পদমদী গ্রামে অবস্থিত মীর মশাররফ হোসেন স্মৃতি কমপ্লেক্স প্রাঙ্গণে জন্মবার্ষকী উপলক্ষে সকাল থেকে দিনব্যাপী রয়েছে বিভিন্ন কর্মসূচি। এ উপলক্ষে উপজেলা প্রশাসন, বাংলা একাডেমি, মীর মশাররফ হোসেন সাহিত্য পরিষদ, মীর মশাররফ হোসেন ডিগ্রি কলেজসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।

১৮৪৭ সালের ১৩ নভেম্বর কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী উপজেলার গৌরী নদীর তীরে লাহিনীপাড়ায় নানাবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন মীর মশাররফ হোসেন। তাঁর পিতা ছিলেন সৈয়দ মীর মোয়াজ্জেম হোসেন এবং মাতা দৌলতুন্নেছা। সাহিত্যচর্চার মাধ্যমে তিনি হয়ে উঠেছিলেন বাংলার প্রথম পূর্ণাঙ্গ মুসলিম কথাশিল্পী।

তাঁর লেখাপড়ার জীবন শুরু হয় কুষ্টিয়ায়, পরে রাজবাড়ীর পদমদী এবং কৃষ্ণনগরের বিভিন্ন বিদ্যালয়ে। জীবনের দীর্ঘ সময় তিনি ফরিদপুরের নবাব এস্টেটে চাকরি করেন এবং কিছু সময় কলকাতায়ও অবস্থান করেন।

১৯১১ সালের ১৯ ডিসেম্বর রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দির পদমদী গ্রামে পৈতৃক নিবাসে তিনি ইন্তেকাল করেন এবং সেখানেই সমাহিত হন। পরবর্তীতে তাঁর স্মৃতি সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে গড়ে তোলা হয় “মীর মশাররফ হোসেন স্মৃতি কেন্দ্র”।

জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে উপজেলা নির্বাহী অফিসার চৌধুরী মুস্তাফিজুর রহমান জানান,”মীর মোশাররফ হোসেনের জন্ম বার্ষিকী উপলক্ষে, উপজেলা প্রশাসন ও বাংলা একাডেমির যৌথ উদ্যোগে সাহিত্য সম্রাটের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। দিবসটি ঘিরে স্থানীয় সাহিত্য সংগঠন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো পৃথকভাবে শ্রদ্ধা নিবেদন ও সাহিত্য পাঠের আয়োজন করছে।

অনুষ্ঠানের সূচিতে রয়েছে, সকাল ১০টায় সমাধিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণের মধ্য দিয়ে মূল অনুষ্ঠান শুরু।বেলা ১১টায় স্মৃতি কমপ্লেক্সে আলোচনা সভা ও সেমিনার।

সভায় সভাপতিত্ব করবেন, রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক সুলতানা আক্তার। প্রধান অতিথি, বাংলা একাডেমির সচিব (উপসচিব) ড. মো. সেলিম রেজা।বিশেষ অতিথি, বাংলা একাডেমির পরিচালক সমীর কুমার সরকার ও ড. সরকার আমিন প্রমুখ।স্বাগত বক্তব্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার চৌধুরী মুস্তাফিজুর রহমান,প্রবন্ধ উপস্থাপনায়, রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ও সাবেক ডিন ড. তুহিন ওয়াদুদ, এছাড়াও বিশেষ আলোচক হিসেবে, মীর মশাররফ হোসেন ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মো. কামাল হোসেন খান, সহকারী অধ্যাপক মো. শাহজালাল, রাজবাড়ী জেলা মীর মশাররফ হোসেন স্মৃতি সংসদের সভাপতি সালাম তাসির এবং বালিয়াকান্দি মীর মশাররফ হোসেন সাহিত্য পরিষদের সভাপতি মুন্সী আমীর আলীসহ অনেকে।”

সাহিত্যকর্মের অবদানে মীর মশাররফ হোসেন একাধারে ছিলেন ঔপন্যাসিক, নাট্যকার, প্রাবন্ধিক ও কবি।

তাঁর উল্লেখযোগ্য উপন্যাসগুলোর মধ্যে রয়েছে

বিষাদ সিন্ধু, জমিদার দর্পণ (১৮৭৩), উদাসী পথিকের মনের কথা (১৮৯০), রত্নবতী, গাজী মিয়ার বস্তানী, বিবি কুলসুম (১৯১০) প্রভৃতি।আত্মজীবনীমূলক রচনায় রয়েছে আমার জীবনী,ধর্মীয় ও প্রবন্ধমূলক রচনায় ছোটদের মহানবী, মৌলুদ শরীফ, বিবি খোদেজার বিবাহ, সঙ্গীত লহরী ইত্যাদি।

তিনি মোট ৩৭টি গ্রন্থ রচনা করেছেন। তাঁর সাহিত্যকর্ম মুসলিম সমাজে নবজাগরণের সঞ্চার ঘটায় এবং বাঙালি মুসলমান সমাজের সংস্কৃতি, বিশ্বাস ও আবেগকে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দেয়।

তাঁর স্মৃতি রক্ষার্থে ১৯৭৮ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর নামে একটি আবাসিক হল নির্মিত হয়, যা দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে ছাত্রদের জন্য নির্মিত দ্বিতীয় বৃহত্তম আবাসিক হল হিসেবে পরিচিত।

মীর মশাররফ হোসেন সাংবাদিক হিসেবেও সক্রিয় ছিলেন। তিনি “সংবাদ প্রভাকর” ও “গ্রামবার্তা প্রকাশিকা” পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং নিজেই সম্পাদনা করতেন মুসলমান সম্পাদিত প্রথম সাহিত্য সাময়িক পত্রিকা “আজীজন নেহার”।

সাহিত্য সম্রাট মীর মশাররফ হোসেনের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে রাজবাড়ীর পদমদী আজ পরিণত হয়েছে সাহিত্যপ্রেমীদের মিলনমেলায়।

তাঁর সাহিত্যচর্চা, মানবিক মূল্যবোধ ও সমাজচেতনা আজও নবীন প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করে চলেছে।

বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির এই অমূল্য সম্পদ বাঙালি জাতির হৃদয়ে অনন্তকাল প্রজ্বলিত থাকবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category